জিডি করার নিয়ম
তথ্য

জিডি করার নিয়ম

জেনে নিন কীভাবে অফলাইন ও অনলাইনে জিডি করবেন

জিডি শব্দটি জেনারেল ডায়েরীর সংক্ষিপ্ত রুপ। প্রতিটি থানায় এবং ফাঁড়িতে একটি ডায়েরীতে ২৪ ঘন্টার খবর রেকর্ড করা হয়। প্রতিদিন সকাল আটটায় ডায়েরী খুলে পরের দিন সকাল আটটায় বন্ধ করা হয়। অর্থাৎ কার্যত এটি কখনই বন্ধ হয় না।

এই ডায়েরীতে থানার বিভিন্ন কার্যক্রম  যেমন আসামী কোর্টে চালান দেয়া, এলাকার বিভিন্ন তথ্য, থানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আগমন ও প্রস্থানের তথ্য ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকে।
সাধারণ মানুষের কাছে জিডির গুরুত্ব
সাধারণ মানুষের কাছে জিডির গুরুত্ব ভিন্ন। কোন থানায় মামলাযোগ্য নয় এমন ঘটনা ঘটলে মানুষ থানায় জিডি করে থাকেন। আবার কাউকে ভয় ভীতি দেখানো হলে বা অন্য কোন কারণে যদি তিনি নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন, কিংবা কোন ধরনের অপরাধের আশঙ্কা করেন তাহলেও তিনি জিডি করতে পারেন। জিডি করার পর পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। প্রয়োজনবোধে তদন্ত করা, নিরাপত্তা দেয়া ছাড়াও জিডির বিষয়টি মামলাযোগ্য হলে পুলিশ মামলা করে থাকে। আইনগত সহায়তা পাওয়ার জন্য জিডি অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অনেক সময় আদালতেও জিডিকে সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
জিডি করা
থানার ডিউটি অফিসার জিডি নথিভুক্ত করেন। এক্ষেত্রে তিনি একটি ডায়েরীতে জিডির নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য লিপিবদ্ধ করেন। জিডির দুটি কপি করা হয়। একটি থানায় সংরক্ষণ করা হয় এবং অন্যটিতে জিডির নম্বর লিখে প্রয়োজনীয় সাক্ষর ও সীলমোহর দেয়া হয়। এটি ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করতে হয়।
অভিযোগকারী নিজে জিডি লিখতে পারেন, আবার প্রয়োজনে থানার কর্মকর্তাও লিখে দিয়ে থাকেন।
প্রতিটি জিডির বিপরীতে একটি নম্বর দেয়া হয়, ফলে কোন অবৈধ প্রক্রিয়া মাধ্যমে কেউ আগের তারিখ দেখিয়ে জিডি করতে পারেন না।
অনলাইন জিডি
আবার পুলিশের তাৎক্ষণিক সাড়া দেবার প্রয়োজন নেই এমন ক্ষেত্রে যেমন পাসপোর্ট হারানো, বাখাটে বা মাদক সেবীদের সম্পর্কে তথ্য প্রদান বা এজাতীয় ক্ষেত্রে অনলাইনে জিডি করা যেতে পারেন বা সরাসরি পুলিশ সদরদপ্তরে ফ্যাক্স বা ই-মেইল করতে পারেন। এ পদ্ধতিতে দেশের বাইরে থেকেও জিডি করা সম্ভব। এক্ষেত্রে অনলাইনে জিডি করার পর ই-মেইল বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জিডি নম্বরটি জিডিকারীকে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
হারানো বিষয়ের জিডি
মোবাইল ফোনের সিম, পরীক্ষার সার্টিফিকেট, জমির দলিল প্রভৃতি হারিয়ে গেলে ঐ সব কাগজপত্র পুনরায় তুলতে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হারানো সংবাদের জিডি চেয়ে থাকে, তাই ঐসব ক্ষেত্রে হারানো সংবাদের জিডি করে সেই জিডি নম্বরসহ কর্তৃপক্ষরে কাছে আবেদন করতে হয়।
জিডির নমুনা

বরাবর

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা

………. থানা

ঢাকা।

বিষয়: এসএসসি সার্টিফিকেট হারানো সংবাদ ডায়েরীভুক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন।

মহোদয়,

আমি নিম্ন সাক্ষরকারী আপনার থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিতভাবে জানাচ্ছি যে, আমার এসএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট আজ সকাল আনুমানিক ১১ টার সময় ঢাকা কলেজের পাশের রাস্তার একটি ফটোকপি করার দোকান থেকে হারিয়ে গেছে।

এমতাবস্থায় হারানোর বিষয়টি ডায়েরীভুক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

Advertisements

সার্টিফিকেটের বিবরণ:

  • পরীক্ষার নাম: …
  • শিক্ষাবর্ষ: …
  • রেজিষ্ট্রেশন নং: …
  • রোল নং: …

দাখিলকারী,

ঠিকানা:

ফোন:

 

অনলাইনে জিডি

১. ওয়েবসাইট: https://gd.police.gov.bd/ এ যান।

২. “অনলাইনে জিডি” ক্লিক করুন।

৩. ফর্ম পূরণ করুন:

  • ঘটনার ধরন: যেমন, মোবাইল হারানো, মারধর, হুমকি, প্রতারণা ইত্যাদি।
  • ঘটনার বিবরণ: কখন, কোথায়, কিভাবে ঘটেছে।
  • সাক্ষীর তথ্য: যদি থাকে।
  • আপনার তথ্য: নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, ইমেইল ইত্যাদি।

৪. “সাবমিট” করুন।

৫. জিডির কপি ডাউনলোড করুন।

Leave a Reply

Back to top button